শওকত ওসমানের জন্ম ১৯১৭ সালে এবং মৃত্যু ১৯৯৮ সালে। তিনি অনেক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে ‘জননী’, ‘ক্রীতদাসের হাসি', ‘জাহান্নম হইতে বিদায়' ইত্যাদি। ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর বইয়ের মধ্যে আছে ‘ওটন সাহেবের বাংলো’, ‘মসকুইটো ফোন’ ইত্যাদি। নিচে শওকত ওসমানের একটি গল্প দেওয়া হলো।
গল্পটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে পড়ো।
শওকত ওসমান
একদিন বিকেলে হন্তদন্ত সাবু উঠান থেকে ‘মা মা’ চিৎকার দিতে দিতে ঘরে ঢুকল। জৈতুন বিবি হকচকিয়ে যায়। রান্নাঘরে পাক করছিল সে। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে শুধায়, কী রে-এত চিক্কর পাড়স ক্যান?
– মা, ঢাকা শহরে গুলি কইরা মানুষ মারছে-
-কে মারছে?
-পাঞ্জাবি মিলিটারি।
দেখা যায় সাবু খুব উত্তেজিত। মুখ দিয়ে কথা তাড়াতাড়ি বের করে দিতে চাইলেও পারে না। কারণ, শরীর থরথর কাঁপছে। হাতে মুঠি বারবার শক্ত হয়।
- মা, একজন দুজন না। হাজার হাজার মানুষ মারছে।
– কস কী, হাজার হাজার?
-হ, সব মানুষ শহর ছাইড়া চইলা আইতাছে।
ঢাকা শহর থেকে পঞ্চাশ মাইল দূরবর্তী গাবতলি গ্রাম। কিন্তু যাতায়াতের সুবিধা নেই। তাই সব খবরই দুদিন বাদে এসে পৌঁছায়। এবার কিন্তু তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। পরদিনেই পাওয়া গেছে সব খবর। যারা জওয়ান তারা সোজা হেঁটে হেঁটে বাড়ি পৌঁছেছে। তাই খবর ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। পঁচিশে মার্চের রাত্রে পাঞ্জাবি মিলিটারি ঝাঁপিয়ে পড়ে। জীবন্ত যাকে পাচ্ছে তাকেই হত্যা করছে।
পরদিন সাবুর সামনে গোটা শহর যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে গেছে জেলা বোর্ডের সড়ক। সেই পথে মানুষ আসতে লাগল। একজন দুজন নয়, হাজার হাজার। একদম পিলপিল পিঁপড়ের সারি। গাবতলি গ্রাম তাদের গন্তব্য নয়। আরও দূরে যাবে তারা। কেউ কুমিল্লা, কেউ নোয়াখালি, কেউ ময়মনসিংহ-একদম গারো পাহাড়ের কাছাকাছি, আরও নানা এলাকায়।
দারুণ রোদ্দুর মাথার উপরে। আর ভিড়। নিশ্বাসে নিশ্বাসে তাপ বাড়ে। হাঁটার জন্য ক্লান্তি বাড়ে। সব মিলিয়ে জওয়ান মানুষেরাই খাবি খাচ্ছে। মেয়ে, শিশু এবং বেশি বয়সীদের তো কথাই নেই। ক্ষুধার কথা চুলোয় যাক, পিয়াসে ছাতি ফেটে দুতিন জন রাস্তার ধারেই শেষ হয়ে গেল।
জৈতুন বিবি মুড়ি ভেজে দিয়েছিল খুব ভোর-ভোর উঠে। সাবু চাঙারি বোঝাই করে মুড়ি এনে ওদের খাইয়েছে। নিজেরা কীভাবে চলবে সে কথা ভাবেনি। মুড়ি শেষ হলে সে পানি জোগানোর কাজে এগিয়ে গেছে।
এক প্রৌঢ় নারীকে দেখে সে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। মুখ দেখে বোঝা যায় অনেক হেঁটেছেন, অথচ তার জীবনে হাঁটার অভ্যেস নেই। সাবুর কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
- মা, পানি খাবেন?
-দাও, বাবা। প্রৌঢ় নারী মুখ খুললেন। গ্লাস আবার ধুয়ে জালা থেকে পানি এগিয়ে দিয়েছিল সাবু। খালি গা। পরনে হাফপ্যান্ট, তাও ময়লা। বড়ো লজ্জা লাগে সাবুর। প্রৌঢ়া পানি খেয়ে তৃপ্ত। হাতে চামড়ার উপর নকশা- আঁকা ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে মুখ মুছলেন। তারপর একটা পাঁচ টাকার নোট সাবুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, বাবা, তুমি কিছু কিনে খেও।
-এ কী! না-না-
-নাও, বাবা ।
-মাফ করবেন। টাকা নিলে আমারে মা বাড়ি থাইকা বাইর কইরা দিব। আমারে কইয়া দিছে, শহেরের কত গণ্যমান্য মানুষ যাইব রাস্তা দিয়া! পয়সা দিলে নিবি না। খবরদার।
সেই পৌঢ়া নারী একটু হাঁফ ছেড়ে বললেন, তোমার মা কিছু বলবেন না ।
–আমার মারে আপনি চেনেন না। মা কন, বিপদে পইড়া মানুষ বাড়ি আইলে কিছু লওয়া উচিত না। গরিব হইতাম পারি, কিন্তু আমরা জানোয়ার না।
শেষ কথাগুলোর পর নিরুপায় সেই নারী সাবুর মুখের দিকে চেয়ে বললেন, বাবা, যদি কখনো ঢাকা শহরে যাও, আমাদের বাড়িতে এসো।
– আপনাদের বাড়ি?
—লালমাটিয়া ব্লক ডি। আমি মিসেস রহমান
মিসেস রহমান আবার রাস্তা ধরলেন। সাবু বুঝতে পারে, এই গরমে হাঁটার পক্ষে মোটা শরীর আদৌ আরামের নয়। বেচারা নিরুপায়। শরীর তো আর নিজে তৈরি করেননি।
তিনি নিমেষে ভিড়ে মিশে গেলেন। ভিড় নয় স্রোত। শহর থেকে যে শুধু গণ্যমান্য মানুষ আসছে, তা নয়৷ সাধারণ মজুর-মিস্ত্রিরা পর্যন্ত আসছে। সাবু ভাবে, তা হলে শহরেও গরিব আছে, যারা তাদের মতোই কোনো রকমে দিন কাটায়, তাদেরই মতো যাদের ঠিকমতো বিশ্রাম জোটে না, আহার জোটে না, কাপড় জোটে না। এই সময় সাবুর আরো মনে হয়, একবার শহর দেখে এলে হতো। লোক তো শহর পর্যন্ত আছেই। এই জনস্রোত ধরে উজানে ঠেলে গেলেই সেখানে পৌঁছানো যাবে। কিন্তু তার সাহস হয় না ।
একদিন তাদের গ্রামের পাশ দিয়ে গেল আট-নয় জনের একটি পরিবার। সম্ভ্রান্ত জন তারা। সত্তর বছরের বুড়ো তাদের সঙ্গে। তিনটি মাঝ-বয়সী মেয়ে-ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে বয়স-তাকে ধরে ধরে আনছে। সঙ্গে আরো পাঁচ-ছয়টি কুঁচো ছেলেমেয়ে, কেউ আট বছরের বেশি নয়। আর আছে লুঙ্গি পরা হাফ শার্ট পরিহিত জওয়ান একজন। তার চেহারা জানান দেয় বাড়ির কাজের লোক। বুড়ো ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। কখনো মেয়ে তিনটির সাহায্য নেয়, কখনো জওয়ান কাজের লোকের! পাঁচ-ছটি কুঁচো ছেলেমেয়ের খবরদারিও সহজ নয়। কাজেই এই কাফেলা রীতিমতো নাজেহাল। আকাশে তেমনি কাঠফাটা রোদ।
শোনা গেল, বুড়োর তিন ছেলেকেই তার সামনে পাঞ্জাবি মিলিটারিরা গুলি করে মেরেছে। সঙ্গী মেয়ে তিনটি বিধবা বউ। কুঁচো ছেলেমেয়েগুলো বুড়োর নাতি-নাতনি।
গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে তারা বসেছিল। খবর জানার কৌতূহলে গাবতলি গাঁয়ের অনেকে ছুটে আসে। আজ কিন্তু কাছে এসে সবাই মিলে যায়। সদ্য বিধবা তিনজন। আর সঙ্গে অমন জয়িফ মানুষ। কেউ মিলিটারির জুলুমের খবর জানবার জন্য আগ্রহ দেখায় না। বরং কীভাবে এদের সাহায্য করতে পারে, তাই জিজ্ঞাসা করে।
পিয়াসে সকলেই অস্থির ছিল। কে একজন তাড়াতাড়ি ছোটো কলস আর গ্লাস নিয়ে এল। কিন্তু এই সামান্য আতিথেয়তায় কেউ সন্তুষ্ট নয়। সাবু নিজেও ভেবে পায় না কীভাবে উপকার করবে! আগে ফায়-ফরমাশ খাটতে কী বিরক্ত লাগত। আর এখন কিছু করতে না পারলে অসোয়াস্তি।
বুড়ো ভদ্রলোক রাজি ছিল না। তবু কয়েকজন উপযাচক হয়ে বিভিন্ন ভার নিল। সাবুও বাদ গেল না। সে একটা কচি ছেলেকে কোলে তুলে নিল। দুই মাইল দূরে নদীর ঘাট। সবাই মিলে পালা করে কাঁধে নিয়ে বুড়ো মানুষটিকে নদীর ঘাট পর্যন্ত দিয়ে আসবে। তারপর নৌকায় তুলে দেবে।
সাবুর কোলে গোলগাল বাচ্চাটা। বছর তিন বয়স। বেশ ভারি। কিন্তু ক্লান্তি নেই সাবুর। মাঝে মাঝে অন্য কেউ তার বোঝা হালকা করতে চাইলে সে বলে, আর একটু আগাইয়া দিই।
বৃদ্ধ আশেপাশের বাহকদের বলে, তোমরাই আমার ছেলে, বাবা। এই গরমে তোমরা ছাড়া কে আর এমন সাহায্য করত। ছেলে আর কোথায় পাব-কথা শেষ হয় না, ফোঁপানির শব্দ ওঠে।
আবার বুড়োর ভাঙা ভাঙা গলা শোনা যায়, জীবনে নামাজ কাজা করিনি, বাবা। ইসলামের নাম নিয়ে বলল, পাকিস্তান হলে মুসলমানদের মঙ্গল হবে। হা-এই বয়সে সব ছেলেদের হারিয়ে বুড়ো কথা শেষ করতে পারে না। দীর্ঘশ্বাস শোনা যায় শুধু।
সমস্ত কাফেলা নীরব। নারীদের মধ্যে একজন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করেছিল। তখনেই থেমে গেল। কে আর কথা বলবে এমন জায়গায়। মনে হচ্ছিল, কতগুলো লাশ নিয়ে যেন সবাই হাঁটছে।
সাবু কল্পনার চোখে যেন সামনে দেখতে পায় :
খাকি উর্দি পরা কতগুলো সিপাই তার সামনে। আর সে তাদের লাথি মেরে মেরে ফুটবলের মতো গড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অসীম আক্রোশে তার রক্ত টগবগ করে ফুটতে থাকে। সেই সব দুশমন কখনও দেখেনি সে। সেই সব জানোয়ার কখনও দেখেনি, যারা তার দেশের মানুষকে বন্যার দিনের পিঁপড়ের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জুলুমের দাপটে।
অমন জন্তুদের মোকাবিলার জন্য তার কিশোর বুকে আশ্চর্য তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
অসোয়াস্তি: খারাপ লাগা । | জয়িফ: অতি বৃদ্ধ। |
উপযাচক: যে যেচে কিছু করে। | জালা: মাটির তৈরি পেট মোটা বড়ো পাত্র। |
উর্দি: সৈনিকদের পোশাক। | নাজেহাল: অতিশয় ক্লান্ত। |
কাফেলা: পথিকের দল। | নিমেষে: চোখের পলকে। |
কুঁচো: ছোটো । | পঁচিশে মার্চ: ১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চ। এই তারিখ রাতে পাকিস্তান বাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে। |
খাবি খাওয়া: অসুবিধা বোধ করা। | পাঞ্জাবি মিলিটারি: মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাধারণ নাম। |
গারো পাহাড়: নেত্রকোণা জেলায় অবস্থিত পাহাড়ের নাম। | প্রৌঢ়: মধ্যবয়সী। |
চাঙারি: বাঁশ বা বেতের তৈরি ছোটো পাত্ৰ। | চিক্কর: চিৎকার। |
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হও। উপরের গল্পে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে রাখো।
‘তোলপাড়’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো ।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
‘তোলপাড়’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
হালিমা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালে এবং মৃত্যু ২০১৮ সালে। তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন; এজন্য তাঁকে ভাষাসৈনিক বলা হয়। হালিমা খাতুন ছোটোদের জন্য অনেক লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে ‘পাখির ছানা’, ‘পিকনিকে' ইত্যাদি। নিচে তাঁর লেখা একটি গল্প দেওয়া হলো ।
গল্পটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে পড়ো।
হালিমা খাতুন
একবার দাদার সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়ে আবু বিশাল একটা বোয়াল মাছ ধরেছিল। তখন ছিল আষাঢ় মাস। ঝরঝর বৃষ্টি পড়ছিল থেকে থেকে। আর বিদ্যুতের ঝলক আকাশের ওপরে সোনার দাগ কেটে পালিয়ে যাচ্ছিল মাঝে মাঝে। যাবার সময় মেঘের আড়াল থেকে তবলার শব্দ শুনিয়ে দিচ্ছিল। আবুর যে বয়স তাতে তার ঘন বর্ষার রাতে মৌরী বিলে মাছ ধরতে যাবার কথা নয়। কারণ বয়স তার মোটে দশ। বড়ো ভাইয়েরা কোনো সময় তাকে সাথে নিতে চায় না। বোয়াল মাছ ধরার দিনও দাদা সাজেদ ও তার বন্ধুরা একেবারেই জানতে পারেনি যে ছোট্ট আবু তাদের সাথে যাচ্ছে। বলে কয়ে যেতে চাইলে দাদারা ওকে সাথে নেবে না। তাই বেচারা আবু চুপি চুপি গিয়ে নৌকার খোলের মধ্যে ঢুকে লুকিয়ে শুয়েছিল এবং সেখানে সে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
বর্ষাকালে মানে আষাঢ় এলেই মৌরী বিলে প্রচুর মাছ পড়ে। বোয়াল, পাঙ্গাস থেকে শুরু করে ট্যাংরা, পুঁটি, পারশে, বেলে সবই পাওয়া যেত। আবুর বড়ো ভাই সাজেদের মাছ ধরার নেশা খুব। অনেকবার সে বড়ো বড়ো মাছ ধরেছে। এবারও দুই বন্ধু বিপুল আর বায়েজিদকে নিয়ে সে মাছ ধরার প্ল্যান করেছিল। তারপর সব গোছগাছ করে বাড়ির নৌকাটা নিয়ে মৌরী বিলের পথে রওনা হলো। সাথে নিল কয়েক রকম জাল, হেরিকেন মাছ আনার বড়ো বড়ো খালুই। আর নিল রাতের খাবার। নৌকা বাইবে কিষান তিনু। দরকার হলে এরাও হাত লাগাবে। অতিরিক্ত দুটো বৈঠাও সাথে করে নিল তারা।
ওদিকে আবু ছটফট করছে কী করে সে ওদের সাথে যাবে। বিপুল ও বায়েজিদকে নিয়ে সাজেদ যখন নৌকায় মৌরী বিলে যাবার পাকাপাকি প্লান করছিল, তখন আবু তো শুনে মনে মনে ঠিক করে ফেলল যে সে ওদের সাথে যাবেই যাবে। তাতে যা হয় হবে। আবুর এই গোপন প্লান সাজেদরা কিছুই জানতে পারেনি। আকাশে মেঘ, তাই তারা সন্ধ্যার আগেই বেরিয়ে পড়ল। মাছ ধরা হবে রাতে। হেরিকেনের আলো দেখলে মাছেরা কেমন যেন রাতকানা হয়ে যায়। তখন মাছ-শিকারিরা জাল দিয়ে ধরে ফেলে সেই পথভোলা মাছগুলোকে।
কিছুদূর যাবার পর ঝর ঝর করে বৃষ্টি নামল। ওরা তিন জন ছাতা মাথায় দিলো। মাথাল মাথায় তিনু নৌকার হাল ধরে বসে রইল। সন্ধ্যা হলো। বৃষ্টি থামল। হেরিকেন জ্বালাল ওরা। একটু পরেই হেরিকেন নিবু নিবু হয়ে এল। সাজেদ হেরিকেনটা নাড়িয়ে দেখে তেল নেই একটুও তাতে। নৌকার খোলের মধ্যে কেরোসিন তেলের বোতল। পাটাতনের তক্তা তুলে দেখে সেখানে ছোটো মতো কে যেন শুয়ে আছে। সাজেদ চেঁচিয়ে উঠল—
: এই বিপুল। এই বায়েজিদ। দ্যাখ এখানে কে যেন শুয়ে আছে।
: কে আবার নৌকার খোলের মধ্যে শুতে যাবে। বোধ হয় ধানের বস্তা। কিষানেরা নামাতে ভুলে গেছে।
: না, বস্তা না। এই কে তুই? কে? কে? বলে সাজেদ শোয়া ব্যক্তিকে ঠেলা দিলো।
আবু তখন হুড়মুড় করে উঠে বসে চোখ ডলতে ডলতে বলল, আমি আবু। বলেই সে কেঁদে দিয়েছে। সাজেদ বিস্মিত হয়ে বলল, “আবু তুই এখানে কী করে এলি? শয়তান, আজ তোকে পিটিয়ে ঠান্ডা করব। কাউকে না বলে চলে এসেছিস। বাড়িতে সবাই তো কান্নাকাটি শুরু করেছে। তাহালে তো মাছ ধরা যাবে না। বাড়ি ফিরে যেতে হবে।'
আবু তখন কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘দাদা মেরো না আমাকে। আমি লুকিয়ে লুকিয়ে তোমাদের কাছে এসেছি মাছ ধরার জন্য। তবে কালুকে বলে এসেছি কেউ খুঁজলে বলে দিতে।'
: ভালো কথা। বুদ্ধির কাজ করেছিস। তা পুচকে ছেলে তুই কী মাছ ধরবি?
: বড়ো মাছ ধরব দাদা।
: বেশ থাক। বড়ো মাছ তোকেই ধরে না নিয়ে যায় দেখিস। দাদার আশ্বাস পেয়ে আবু মনের সুখে গান ধরল: চল্ চল্ চল্ ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল।
সাজেদ শুনে বলল, ‘মাদল তোর মাথায় না পড়ে! তুই বরং পাটাতনের নিচে তোর জায়গায় গিয়ে ঘুমিয়ে থাক। মাছ এসে তোকে ডেকে তুলবে।
: না আমি ঘুমাব না। বড়ো মাছ ধরব। তোমরা মাছ ধরবে আর আমি ঘুমিয়ে থাকব, তা হবে না! তা হবে না!
: তা তুই মাছ কী দিয়ে ধরবি?
: আমি বড়শি আর টোপ নিয়ে এসেছি।
আবু তখন তার পুটুলি থেকে বড়শি আর টোপ বের করে দেখাল। তা দেখে সাজেদ ও তার বন্ধুরা হেসেই গড়াগড়ি। এমন অদ্ভুত বড়শি আর টোপ তারা কখনও দেখেনি। সাজেদ বলল -
: ও, এই তোর বড়শি কেরোসিনের টিনের আংটা দিয়ে বানানো! এ দিয়ে মাছ কেন কুমিরও ধরতে পারবি। জলহস্তী তো আমাদের দেশে নেই। থাকলে তাও তোর এই বড়শি দিয়ে ধরতে পারতিস। তা দেখি তোর টোপ । ও, তেলাপোকা। তেলাপোকা কি মাছে খায়?
: খায় খায়, আমি জানি।
: ঠিক আছে তুই নৌকায় বসে কুমির, জলহস্তী যা খুশি ধর। আমরা পানিতে নেমে জাল ফেলব। দেখিস ঘুমিয়ে পড়িস না যেন। আর তিনু ভাই তুমি ওকে দেখ। আমরা চললাম। দেরি হয়ে গেল অনেক। আর দেরি করলে মাছ পাওয়া যাবে না। তোর জন্য খালি খালি সময় নষ্ট হলো। বলে কয়ে এলে কী হতো?
আবু কোনো জবাব না দিয়ে চুপ করে রইল। একা নৌকায় থাকতে পেরে আবুর খুব আনন্দ হলো। সে তাড়াতাড়ি মাছ ধরার সরঞ্জাম বের করল। তার দুটো বড়শিতে তেলাপোকার টোপ গেঁথে পানিতে ছুঁড়ে দিলো। তারপর বড়শির দড়ি নৌকার গলুইয়ের সাথে জড়িয়ে বেঁধে বসে রইল। অন্ধকার চারদিক। কেবল মাছ শিকারিদের হেরিকেনের আলো বিলের পানিতে নেচে চলেছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। মনে হচ্ছে আকাশটাকে কে যেন সোনার কাঠি দিয়ে ভাগ করছে।
আবুর মনে খালি একটাই ভয়। বড়শিতে মাছ ধরা পড়বে কি না। এত কষ্ট করে লুকিয়ে এসে যদি মাছ না পায় তাহলে তো সবাই খেপাবে। আর মারও খেতে হবে নিশ্চয়ই। বড়শির দড়ির সাথে কয়েকটা জোনাকি পলিথিনের থলের মধ্যে ভরে ফাতনার মতো বেঁধে দিয়েছিল। সেই জোনাকি ফাতনার দিকে সে চেয়ে বসেছিল। সুবোধ কাকার কাছে সে শুনেছিল যে বোয়াল মাছ তেলাপোকা ভালোবাসে। তাই সে তেলাপোকার টোপ দিয়ে বড়শি ফেলার কথা ভেবেছিল। কাকা নাকি একবার তেলাপোকার টোপ দিয়ে পাঁচটা চিতল মাছ ধরেছিল। সে অবশ্য অনেকদিন আগের কথা। যা হোক, আবু ভাবতে লাগল মাছের কথা। এমন সময়ে দেখল ফাতনাটা শাঁ করে পানির মধ্যে ডুবে গেল। সে তাড়াতাড়ি গলুইয়ের সাথে বাঁধা বড়শির দড়ি ছাড়াতে লাগল। ছাড়াতে ছাড়াতে দড়ি প্রায় শেষ হয়ে গেল। তারপর সে দড়ি টেনে টেনে আবার গলুইয়ের সাথে জড়াতে লাগল। প্রথমে দড়িতে ভার লাগল না। তার মনটাই দমে গেল। কিন্তু একটু পরেই দড়িতে ভার বোধ হতে লাগল আর খুব টানাটানি শুরু হয়ে গেল। এমন সময় বৃষ্টি নামল।
তিনু হাল ধরে বসেছিল। আৰু তিনুকে প্রাণপণে ডাকতে লাগল, তিনু ভাই তিনু ভাই। বড়ো মাছ, শিগগির আস। তিনু বলল –
: ধুর পাগল! এই বিলে বড়ো মাছ কোথা থেকে আসবে। খাল, বিল তো এখন মরেই গেছে। আগের দিন হলে কথা ছিল।
: না বড়ো মাছে ধরেছে। তুমি এসো তিনু ভাই। আমার হাত কেটে যাচ্ছে।
তিনু তখন এগিয়ে এসে বড়শির দড়ি ধরল। তারা দুজনে ধরে দড়ি জড়াতে লাগল হালের খুঁটির সাথে। জড়াতে জড়াতে ওরা দুজন একদম ক্লান্ত হয়ে গেল। বৃষ্টি তখনও ঝরছে। ওরা ভিজে ভিজে একাকার। কিন্তু সেদিকে খেয়াল না করে ওরা বড়শির দড়ি টেনে যেতে লাগল। টানতে টানতে শেষে একটা হ্যাঁচকা টান দিতে বিশাল বড়ো কী যেন একটা নৌকার খোলের মধ্যে দড়াম করে এসে পড়ল। আর এলোপাথাড়ি লাফালাফি করতে লাগল।
তাতে নৌকা প্রায় ডুবে যাবার মতো হলো। তখন জোর বিদ্যুৎ চমকাল। ওরা সেই আলোতেই দেখল বিশাল একটা বোয়াল মাছ, প্রায় আবুর সমান। বোয়াল লাফাতে লাগল। তিনু তখন খোলের তলা থেকে একটা বস্তা এনে বোয়ালের গায়ে চাপা দিলো। খানিকক্ষণ ধস্তাধস্তি করে বোয়াল শান্ত হলো। আবুর খুশির নাচ তখন কে দেখে!
এমন সময়ে সাজেদরা ফিরে এল। আজ তাদের জালে পুঁটি ছাড়া কিছুই ধরা পড়েনি। তাই রাগ করে তারা তাড়াতাড়ি চলে এসেছে। এসেই দেখে আবুর বিশাল বোয়াল। দেখে তাদের বিশ্বাস হতে চায় না। সাজেদ বলল, ‘এই আবু, অত বড়ো বোয়াল কোথা থেকে এল?” আবু বলল, ‘পানি থেকে। আর আমি ধরেছি!”
এলোপাথাড়ি: এদিক ওদিক। | পুচকে: খুব ছোটো। |
কিষান: কৃষি-মজুর। | ফাতনা: বড়শির সুতায় বাঁধা ভাসমান কাঠি বা শোলা। |
খালুই: মাছ রাখার ঝুড়ি। | বড়শি: বাঁকা ও আলযুক্ত লোহার কাঁটা যাতে মাছের টোপ গাঁথা হয়। |
গলুই: নৌকার দুই মাথার সরু অংশ। | মাথাল: রোদ-বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর জন্য বাঁশ বা পাতা দিয়ে তৈরি টুপি। |
জোনাকি: অন্ধকারে জ্বলে-নেভে এমন এক ধরনের পোকা। | মাদল: এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র। |
টোপ: মাছ ধরার জন্য বড়শিতে গেঁথে দেওয়া খাবার। | রাতকানা: রাতে ভালো দেখতে পায় না এমন। |
ধস্তাধস্তি: কোস্তাকুস্তি। | হাল: নৌকার দিক ঠিক রাখার জন্য বিশেষ বৈঠা। |
নৌকার খোল: নৌকার পাটাতনের নিচের ফাঁকা জায়গা। | হেরিকেন: হারিকেন; কাচ দিয়ে ঘেরা কেরোসিনের বাতি। |
পাকাপাকি প্লান: চূড়ান্ত পরিকল্পনা। | পাটাতন: কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি নৌকার মেঝে। |
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হও। উপরের গল্পে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে রাখো।
‘আষাঢ়ের এক রাতে' গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
গল্পের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
---|---|---|---|
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | ||
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | ||
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | ||
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | ||
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | ||
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | ||
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | ||
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | ||
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | ||
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | ||
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | ||
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? |
কাহিনি বলার জন্য লেখক গদ্য ভাষায় যে রচনা তৈরি করেন, তাকে গল্প বলে। গল্প আয়তনে সাধারণত ছোটো হয়ে থাকে। তবে বড়ো আয়তনের গল্পকে বলে উপন্যাস। যিনি গল্প লেখেন তিনি গল্পকার; আর যিনি উপন্যাস লেখেন, তিনি ঔপন্যাসিক। গল্পকার ও ঔপন্যাসিককে কথাসাহিত্যিক বলা হয়।
প্রতিটি গল্পের মধ্যে কাহিনি থাকে। যেমন, ‘তোলপাড়' গল্পের কাহিনি: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় কিছু লোক প্রাণ বাঁচানোর জন্য শহর থেকে গ্রামে চলে যাচ্ছে এবং গ্রামের মানুষ তাদের সহযোগিতা করছে।
গল্পের কাহিনি গড়ে ওঠে কিছু চরিত্রের মধ্য দিয়ে। যেমন, ‘তোলপাড়’ গল্পের কাহিনিতে আছে-সাবু, মিসেস রহমান, বৃদ্ধ লোক, গ্রামবাসী ইত্যাদি চরিত্র।
গল্পের চরিত্র অনেক সময়ে কথা বলে, সেসব কথাকে সংলাপ বলা হয়। যেমন, ‘তোলপাড়' গল্পে মিসেস রহমানের মুখের সংলাপ: ‘বাবা, তুমি কিছু কিনে খেও।
নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। গল্পটির একটি নাম দাও।
……………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
তোমার লেখা গল্প থেকে নিচের বিষয়গুলো খুঁজে বের করো এবং লেখো :
১. কাহিনি (মূল কাহিনি)………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
২. চরিত্র (কয়েকটি চরিত্রের নাম)……………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
৩. সংলাপ (যদি থাকে, তার দু-একটি নমুনা)…………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
Read more